সংক্ষিপ্ত আলোচনা - দাম


[ বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ ebanglaschools এর সমস্ত আলোচনা কোনো পণ্ডিত ব্যক্তিবর্গের জন্য নয়। সাধারণ এবং অতি সাধারণ পিছিয়ে পড়া ছাত্র ছাত্রীদের জন্যই এই উদ্যোগ। তাদের কথা ভবেই এই আলোচনার প্রচেষ্টা। বিশিষ্টরা দূরে থাকুন । আমাদের একান্ত অনুরোধ যদি ছাত্র ছাত্রীরা এই আলোচনা থেকে উপকৃত হও তাহলে নীচের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করতে ভূলে যেও না। ]    




সংক্ষিপ্ত আলোচনা - দাম



নারায়ন গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দাম’ গল্পটি ১৩৬৫ বঙ্গাব্দে শারদীয়া “তরুণের স্বপ্ন” পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়। তাঁর অন্যান্য গল্পের মত এই গল্পটিও বেশ উল্লেখযোগ্যও। গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র সুকুমার, অংক নামক বিষয়টি তার কাছে বিভীষিকার মত। কিন্তু ছেলেবেলায় তার স্কুলের মাস্টারমশাই যেন তেন প্রকারেন সকলকে অংক শেখাতে চান। তিনি মনে করেন জীবনটা অংকের মত, অংক না শিখলে জীবন ভালোভাবে গড়া যায় না।  সেকারনেই সকলকে মারধর করে জোর করে অংক শেখাতে বসতেন।
       কিন্তু জোর করে তো কাউকে কিছু সেখানো যায় না। তাই সুকুমারকেও শেখানো যায়নি। উচ্চশিক্ষায় সে বাংলা সাহিত্য নিয়ে পড়ে এবং পরবর্তী কালে সে বাংলার অধ্যাপক হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেন। এরপরই গল্পের মূল আকর্ষণ। সুকুমার বাংলার অধ্যাপক হলে নানান পত্র পত্রিকা থেকে তার কাছে আবদার আসে নিজস্ব গল্প রচনার জন্য। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে লক্ষণীয় সে গল্পের বিষয় স্থির করে উঠতে পারে না, শেষ পর্যন্ত ছেলেবেলার স্কুলের সেই মাস্টারমশাইয়ের কথা গল্পের বিষয়বস্তু রূপে নির্বাচন করেন, সেখানে সে জানায় মাস্টারমশাই সেদিন ভূল ছিল। তার পদ্ধতিও ভূল ছিল। আরো ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলে ছাত্রদের ভয় দেখিয়ে পিটিয়ে কখনো মানুষ করা যায় না। তার ক্ষোভ জানিয়ে তার দশটাকা প্রাপ্তিও হয়।
       গল্পের শেষ অংশে আমরা লক্ষ্য করি সুকুমার একসময় বাংলাদেশের একটি প্রত্যন্ত কলেজে বক্তৃতা রাখতে যায়। সেখানে তার বক্তৃতা শুনে সবাই অভিভূত হয়ে পড়ে। এখানেও একটি বিশেষ কথা লক্ষণীয় যে, সে নিজেই জানায় সে একটি মাত্র বক্তৃতাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অদল বদল করে চালিয়ে দেয়। আর সেই বক্তৃতা শুনে সকলে মুগ্ধও হয়। কাজেই সকলের কাছে সে নিজেকে গ্রহণযোগ্য করে তুললেও নিজের কাছে পরিতৃপ্ত হতে পারে না। সেকারনেই এক সময় ছেলেবেলার মাস্টারমশাইয়ের সাথে দেখা হলে তার সামনে দাঁড়াতেও সংকোচ বোধ করে। কারণ সে নিজেকে আর বড় করে ভাবতে পারে না।
সুকুমার আরো লজ্জিত হয় মাস্টারমশাইয়ের হাতে সেই পত্রিকা দেখে। সে তো সেই পত্রিকাতেই মাস্টারমশাইকে অসম্মান করেছিল , তার স্নেহ মায়া ভালোবাসাকে মাত্র দশটাকার বিনিময়ে বিক্রি পর্যন্ত করেছিল। আজ সে নিজের কাছেই নিজে লজ্জিত অপমানিত। তার কাছে যেন তার কথাই বারবার ফিরে আসে সত্যিই মাস্টারমশাই তাকে পিটিয়ে মানুষ করতে পারেনি, আসলে পিটিয়েতো কাউকে মানুষ করা যায় না। তার সেদিনের সেই নিস্তব্ধতাকে ভেঙে দিয়ে মাস্টারমশাই সুকুমারকে বুকে টেনে ধরে। সমস্ত মান অভিমান যেন এক নিমেষে কোথায় হারিয়ে যায়। আসলে মাস্টারমশাইরা তো এমনই হয়। এই মাস্টারমশাইকেই সে দশ টাকায় বিক্রি করেছে। তবুও সুকুমারের মধ্যে আত্মগ্লানি মোছে না। সে উপলব্ধি করে সে অধ্যাপক হলেও যারা তাকে এই শিখরে পৌঁছে দিয়েছে তাদের শিক্ষা – মায়া – ভালোবাসার ‘দাম’ সে দিতে পারেনি।




















copywrite ebanglaschools
পুনর্মুদ্রণযোগ্য নয়।


6 comments:

  1. অনেক ধন্যবাদ

    ReplyDelete
  2. I want a project for my exam
    বিষয়টি হচ্ছে আমাকে বাংলার প্রজেক্ট দিয়েছে স্কুল থেকে যার মধ্যে বলা হয়েছে যে তোমার জীবনে দাম গল্পের শিক্ষকের মত কোন শিক্ষক যদি এসে থাকে তার সম্বন্ধে লেখ আমি সেটার সম্বন্ধে একটুখানি জানতে চাই। ধন্যবাদ

    ReplyDelete
    Replies
    1. আমি জানতে চায়

      Delete
    2. আমি জানতে চায়

      Delete
    3. আকিবুল হালদার

      Delete